দলীপ ট্রফি ফাইনাল ২০২৫: রজত পাটিদার ও যশ রাঠৌরের সেঞ্চুরিতে মধ্যাঞ্চল দল এগিয়ে

বেঙ্গালুরু: ২০২৫ সালের দলীপ ট্রফির ফাইনাল ম্যাচে মধ্যাঞ্চল দল দক্ষিণাঞ্চলের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে মধ্যাঞ্চল দল ২৩৫ রানের লিড নিয়ে আছে এবং প্রথম ইনিংসে এখনও ৫ উইকেট হাতে রেখেছে। ফাইনাল ম্যাচটি রজত পাটিদার এবং যশ রাঠৌরের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে মধ্যাঞ্চল দলের জন্য স্মরণীয় হয়ে উঠেছে।

দক্ষিণাঞ্চল দল প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১৪৯ রানে অলআউট হয়। তাদের ইনিংস শুরুতে ভালো প্রতিরোধ থাকলেও মধ্যাঞ্চলের বোলারদের দক্ষতা এবং ধারাবাহিক বোলিংয়ের কারণে দলটি বড় স্কোর করতে পারেনি। মধ্যাঞ্চল দল শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৯৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়েছিল, যা মুহূর্তের জন্য কিছুটা উত্তেজনা তৈরি করেছিল। তবে এরপর রজত পাটিদার এবং যশ রাঠৌরের জুটি মাঠে নেমে দলকে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে নেয়।

রজত পাটিদার দ্বিতীয় দিনে ১০১ রান করে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তিনি এই ইনিংসে ১২টি চার এবং ২টি ছয় মেরেছেন। বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়, তিনি প্রথম ৫০ রান করতে ৭৩ বল খেলে দলের নিরাপদ ভিত্তি গড়ে দেন এবং পরবর্তী ৫০ রান মাত্র ৩৯ বলেই করে দেখান তাঁর আক্রমণাত্মক ক্ষমতা। এই সেঞ্চুরি তাঁর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৫তম। অন্যদিকে, যশ রাঠৌর ১৩৭ রানের ইনিংস খেলে ক্রিজে টিকে থেকে দলের জন্য বিশাল পার্টনারশিপ গড়ে দেন। এ দুজনের মধ্যে ১৬৭ রানের জুটি গড়ে মধ্যাঞ্চল দলকে বড় সুবিধা এনে দেয়।

দক্ষিণাঞ্চলের পক্ষ থেকে গুরজপনীত সিংহ এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে সফল বোলার হিসেবে ৩ উইকেট নিয়েছেন। প্রথম সেশনে তিনি ব্যাটসম্যানদের উপর দাপট দেখালেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেশনগুলোতে পাটিদার এবং রাঠৌর পুরোপুরি চড়াও হন এবং দক্ষিণাঞ্চলের বোলিংকে চ্যালেঞ্জ দেন। এছাড়া, সারাংশ জৈন ধীরগতিতে ব্যাটিং করে ১১৯ বলে ৪৭ রান করেন। তাঁর স্ট্রাইক রেট মাত্র ৩৯.৫০, যা দলের আক্রমণাত্মক গতিকে সামান্য ব্যাহত করেছে, তবে এই ইনিংস দলকে কিছুটা স্থিতিশীলতা দিতে সক্ষম হয়েছে।

মধ্যাঞ্চল দলের দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরুতে রজত এবং যশের জুটি প্রায় নিখুঁত সমন্বয় দেখায়। তারা দলের রানের হিসাব নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং বলার মতো পার্টনারশিপ গড়ে তোলে। দ্বিতীয় দিনের শেষ দিকে যদিও দক্ষিণাঞ্চল দল কিছু আশা দেখিয়েছে। এক সময় মধ্যাঞ্চল দল ৩ উইকেটে ২৬০ রান তুলেছিল, কিন্তু ৬ রানের মধ্যে ২ উইকেট পড়ায় দক্ষিণাঞ্চলের জন্য একটি সামান্য আশার আলো দেখা যায়।

এই ফাইনালে রজত পাটিদার এবং যশ রাঠৌরের ব্যাটিং ছাড়া মধ্যাঞ্চল দলের জন্য বড় অবদান রেখেছে দলীয় পরিকল্পনা এবং ম্যাচের ধরন নিয়ন্ত্রণ করা। পাটিদারের নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা, যিনি আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক, এবং রাঠৌরের ধারাবাহিক ব্যাটিং মেলবন্ধন মধ্যাঞ্চলকে দৃঢ় অবস্থানে নিয়ে এসেছে।

ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে মধ্যাঞ্চল দল পুরোপুরি খেলায় দাপট দেখিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চল অবশ্য প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও পাটিদার ও রাঠৌরের ব্যাটিংয়ের কারণে তারা বড় কোনো সুবিধা নিতে পারেনি। এ মুহূর্তে মধ্যাঞ্চল দলের পজিশন ম্যাচ জিতার পথে অত্যন্ত শক্তিশালী মনে হচ্ছে।

মোটমাট, ফাইনালের এই খেলা এখনো উত্তেজনাপূর্ণ। দ্বিতীয় দিনের শেষে মধ্যাঞ্চল দলের লিড, প্রধান ব্যাটসম্যানদের সেঞ্চুরি এবং শক্তিশালী পার্টনারশিপ ফাইনালের দিক থেকে তাদের প্রাধান্য নিশ্চিত করছে। রজত পাটিদার ও যশ রাঠৌরের এই জুটি দলীয় শক্তিকে দৃঢ় করেছে এবং মধ্যাঞ্চল দলের জন্য জয়ের সম্ভাবনা অনেকটাই উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *