কলকাতা, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫: কলকাতা ফুটবল লিগ (CFL 2025)-এর সুপার সিক্সে লাল-হলুদ ঝড় বইছে। ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) বৃহস্পতিবার ইউনাইটেড কলকাতা (UKSC)-কে ৩-০ গোলে হারিয়ে সুপার সিক্সে শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করেছে। অপর ম্যাচে ডায়মন্ড হারবার ৪-০ গোলে সুরুচি সংঘকে হারিয়েছে।
শুরু থেকেই টানটান লড়াই
ম্যাচের শুরু থেকেই উভয় দলই আক্রমণাত্মক। মাঠে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সুযোগ তৈরি করতে থাকেন খেলোয়াড়রা। ২৯ মিনিটে ইউনাইটেড কলকাতার সমীর বায়েন একচেটিয়াভাবে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার চমৎকার রক্ষার মাধ্যমে সমীরের শট ব্লক করেন।
ইস্টবেঙ্গলের হয়ে গোলকিপার, ডিফেন্ডাররা যথাযথ ভূমিকা পালন করেছেন, যদিও কিছু খেলোয়াড় অসুস্থ বা চোটের কারণে খেলেননি। সৌভিক চক্রবর্তী গোড়ালিতে চোটের কারণে মাঠে ছিলেন না, আর সুমন দে পুরোপুরি ফিট ছিলেন না। কিন্তু দেবজিৎ মজুমদার ও সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি এবং পিভি বিষ্ণু, ডেভিডদের দুর্দান্ত খেলা দলের আক্রমণশক্তি কমতে দেননি।
প্রথমার্ধে গোল উৎসব শুরু
প্রথমার্ধের ৩৬ মিনিটে পিভি বিষ্ণু গোল করার সুযোগ পান, কিন্তু গোলরক্ষককে ধরা পড়ে শটটি। ৩৯ মিনিটে আমন সিকেও সুযোগ হারান। তবে বিরতির আগে ৪০ মিনিটের দিকে আমনের ভাসানো বল থেকে নসিব রহমান গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন। প্রথমার্ধ গোলশূন্য শেষ হয়নি, লাল-হলুদ দলের জন্য এটি আত্মবিশ্বাসের বড় ইঙ্গিত।

দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণ আরও শক্তিশালী
দ্বিতীয়ার্ধে ইউনাইটেড কলকাতা কোনও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। বিনো জর্জের নির্দেশনায় ইস্টবেঙ্গল আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে। ৪৮ মিনিটে দুর্দান্ত ফ্রি-কিক থেকে পিভি বিষ্ণু স্কোর ২-০ করে দলকে আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান। পরবর্তী মিনিটে মনোতোষ মাঝিও গোল করার সুযোগ পান, কিন্তু গোললাইন সেভের কারণে এটি গোল হয়নি।
৬৮ মিনিটে ম্য়াচের তৃতীয় গোল আসে গুইতে, যা তিনি নিজের বাবাকে উৎসর্গ করেন। বাকি সময়ে কোনও দলই গোল করতে পারেনি।
সুপার সিক্সে ইস্টবেঙ্গলের অবস্থান
কলকাতা লিগের সুপার সিক্সে ইস্টবেঙ্গল এখন দৃঢ় অবস্থানে। এই জয়ের মাধ্যমে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। দলের স্ট্র্যাটেজি এবং আক্রমণাত্মক খেলা ভবিষ্যতের ম্যাচের জন্য আত্মবিশ্বাস জোগাবে।
ডিফেন্স ও আক্রমণ উভয় ক্ষেত্রেই দলের পারফরম্যান্স প্রশংসনীয়। পিভি বিষ্ণু, নসিব রহমান ও গুইতের অবদান ইস্টবেঙ্গলের জন্য বড় শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। যদিও কিছু খেলোয়াড় চোট বা অসুস্থ থাকায় পুরো শক্তি খেলাতে পারেননি, তবুও দলের একতার মাধ্যমে জয় নিশ্চিত হয়েছে।
পরবর্তী ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি
ইস্টবেঙ্গলের এই জয় দলের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। সুপার সিক্সে প্রতিটি ম্যাচই নক-আউটের মতো। তাই দলের ফিটনেস, ডিফেন্স, এবং আক্রমণ শৈলী আরও উন্নত করতে হবে। দলের কোচ বিনো জর্জ এবং সহায়ক স্টাফরা খেলোয়াড়দের মানসিক ও শারীরিক প্রস্তুতিতে বিশেষ নজর দিচ্ছেন।
এই জয়ের মাধ্যমে ইস্টবেঙ্গল ফ্যানদের আশা আরও উজ্জ্বল হয়েছে। সুপার সিক্সে দলের পারফরম্যান্স, আক্রমণ শক্তি এবং দলগত একতা আগামী ম্যাচগুলোতে প্রমাণ করবে কেন তারা লিগের অন্যতম শক্তিশালী দল।